অন্যান্য ফেসবুক থেকে পাওয়া

সাধারণ পাঠাগার বাঁচাতে কুড়িগ্রামের নাগরিকদের উদ্দেশ্যে খোলা চিঠি

প্রাপক: কুড়িগ্রামের নাগরিকগণ

প্রিয় কুড়িগ্রামবাসী,
আপনারা জানেন, কুড়িগ্রাম সাধারণ পাঠাগারকে (কলেজ মোড়) বাঁচাতে, পড়ালেখার সুষ্ঠু পরিবেশ বজায় রাখতে আমরা আন্দোলন শুরু করেছি৷ কুড়িগ্রামে যাদের জন্ম, যারা এই কুড়িগ্রামের আলো-হাওয়ায় বেড়ে উঠেছেন তাদেরকে এই পাঠাগারের প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কে নতুন করে বলার প্রয়োজনীয়তা নেই৷ এই পাঠাগার থেকে বহু পাঠক, লেখক, গবেষক, কবি, শিক্ষক, সাহিত্যিক, সাংবাদিক, আইনজীবী, সংস্কৃতিকর্মী জ্ঞান আহরণ করেছেন ও আলো ছড়িয়েছেন। কিন্তু বর্তমানে এই পাঠাগারে কোচিং বাণিজ্য পরিচালনার মাধ্যমে সাধারণ পাঠকের পাঠাভ্যাস, পাঠচক্র ও আলোচনার সংস্কৃতিকে ভেঙে দিয়ে পরিকল্পিতভাবে পাঠাগারকে অবরুদ্ধ করে ফেলা হয়েছে। যে পাঠাগার ছিলো সাধারণ মানুষের পড়ালেখার জায়গা সে পাঠাগার হয়ে উঠেছে একটি কোচিং বাণিজ্যের স্থান।

যে পাঠাগারে একসময় সাধারণ পাঠক বসে একাডেমিকাল বইয়ের পাশাপাশি পাঠাগারের বই পড়তেন, আজ সেই সাধারণ পাঠাগারে সাধারণ পাঠক প্রবেশ করলে হতে হয় অপমানিত!

আমরা পাঠাগারকে সকলের জন্য উন্মুক্ত করার লক্ষ্যে গত ৪ সেপ্টেম্বর, ২০২৫ জেলা প্রশাসক বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করি। কুড়িগ্রামের সাধারণ মানুষ আমাদের এই সাহসী কাজকে সমর্থন জানায়। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য স্মারকলিপি প্রদানের পর থেকেই একটি কুচক্রীমহল, যারা কোচিং বাণিজ্যের সাথে যুক্ত, তারা আমাদের বিরুদ্ধে অপপ্রচারে সরবে হয়ে ওঠে। এমনকি আমাদের হুমকি-ধামকি দেয়া হচ্ছে৷ যে সাংবাদিকগণ এ প্রসঙ্গে সংবাদ প্রকাশ করেছেন, তাদেরও হুমকি দেয়া হচ্ছে!

এমতাবস্থায়, সাধারণ পাঠাগারকে সাধারণ পাঠকের জন্য উন্মুক্ত করতে, কোচিং বাণিজ্য বন্ধ করতে আপনাদের সহযোগিতা প্রত্যাশা করছি৷ আমাদের অনুরোধ, আপনারা কুড়িগ্রাম সাধারণ পাঠাগারের পাশে দাঁড়ান৷ যার যতটুকু সাধ্য এগিয়ে আসুন৷ ফেসবুকে পোস্ট করুন, জেলা প্রশাসককে ব্যবস্থা নিতে চাপ প্রয়োগ করুন, পাঠাগারে সবাই প্রবেশ করে বই পড়ুন, আমাদের সাথে মাঠে নামুন, যেভাবে সাধ্য সেভাবেই এগিয়ে আসুন৷

সবার সক্রিয় সহযোগিতা ছাড়া হয়তো আমরা পাঠাগারটিকে বাঁচাতে পারবো না৷

কুড়িগ্রাম সাধারণ পাঠাগার (কলেজ মোড়) বাঁচাতে আমাদের দাবিসমূহ—

১৷ সাধারণ পাঠাগারে সাধারণ পাঠককে প্রবেশ করতে দিতে হবে৷
২৷ অবৈধ মাসিক ফি বাণিজ্য বন্ধ করতে হবে৷
৩৷ পাঠাগারের ভিতরে প্রাইভেট পড়ানো ও পিকনিক পার্টি বন্ধ করতে হবে৷
৪৷ টেবিল চেয়ার দখল নিয়ে সরকারি সম্পত্তিকে ব্যক্তিগত মালিকানায় ব্যবহার বন্ধ করতে হবে৷
৫৷ পাঠাগার পরিচালনায় সরকারি আইন ও নীতিমালা বাস্তবায়ন করতে হবে।
৬৷ লাইব্রেরিয়ান নিয়োগের মাধ্যমে পাঠাগারকে নিয়মতান্ত্রিকভাবে পরিচালনা নিশ্চিত করতে হবে।
৭৷ শতবর্ষের পুরোনো ও ঐতিহাসিক বই, বুকশেলফ ও আসবাবপত্র সংরক্ষণের জন্য জরুরি ব্যবস্থা নিতে হবে।
৮৷ পাঠাগারের ভেতরে সরকারি নীতিমালা মেনে সাহিত্যিক ও শিক্ষামূলক কার্যক্রমকে প্রশাসনিক সুরক্ষা প্রদান করতে হবে।

প্রেরক: কুড়িগ্রামের ১৯ সংগঠন
(প্রথম আলো বন্ধুসভা, হিজিবিজি, বসুন্ধরা শুভসংঘ, কুড়িগ্রাম সাহিত্যসভা, কুড়িগ্রাম ডিবেট ফেডারেশন, এনসিটিএফ, ইয়োথনেট, সারথী, সাংস্কৃতিক ইউনিয়ন, এসিএমও, পদ্মকলি খেলাঘর আসর, পরিবেশ বীক্ষণ, জুভেন্স রাইট নেট, জেএফসিএলআর, ওআইসিএস, প্রীতিলতা ব্রিগেড, কুড়িগ্রাম বিজ্ঞান ক্লাব, অনুশীলন, চর মিউজিয়াম)

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।