আষাঢ়ের তৃতীয় দিনে আগামী সোমবার দেশে উদযাপিত হবে ঈদ উল আযহা। ঈদের জামাত মাঠে, না কি মসজিদে, কোরবানি কোথায় হবে– সব কিছুই নির্ভর করবে আকাশের অবস্থার ওপর। আজ শনিবার সকাল থেকে কালো হয়ে ছিল আকাশ, কোথাও কোথাও হয়েছে ভারি বর্ষণ, তাই চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে কেমন যাবে ঈদের দিনটা? আজ ১৩ জেলায় বয়ে গেছে মৃদু তাপপ্রবাহ। এবার বর্ষার একেবারে শুরুতে ঈদের দিন রংপুর, সিলেট, ময়মনসিংহ বিভাগে মাঝারি থেকে ভারি বৃষ্টির আভাস দিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। তবে দেশের অন্য জায়গায় সোমবার বৃষ্টির সম্ভাবনা কম। ঈদের দিন বৃষ্টি-মেঘে-রোদে খেলবে আকাশ । এদিন ঢাকায় বৃষ্টি হতে পারে, হলেও সেটি খুব বেশি নয়।
শনিবার সন্ধ্যায় পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, ঈদের দিন সারা দেশে একযোগে বৃষ্টি হবে না। তবে দেশের উত্তরাঞ্চলে বৃষ্টির দাপট থাকতে পারে বেশি। মধ্যাঞ্চলে বিক্ষিপ্তভাবে বৃষ্টি হবে। আর দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে বৃষ্টির সম্ভাবনা নেই বললেই চলে। শনিবার সন্ধ্যা থেকে রোববার সন্ধ্যা পর্যন্ত রংপুর, ময়মনসিংহ ও সিলেট বিভাগের অধিকাংশ জায়গায়; ঢাকা, রাজশাহী ও চট্টগ্রাম বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় এবং খুলনা ও বরিশাল বিভাগের দুএক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়াসহ হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি/বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সেই সঙ্গে রংপুর, ময়মনসিংহ ও সিলেট বিভাগের কোথাও কোথাও মাঝারি ধরনের ভারি থেকে অতি ভারি বর্ষণ হতে পারে।
খুলনা বিভাগসহ রাজশাহী, পাবনা ও চাপাইনবাবগঞ্জ জেলার ওপর দিয়ে মৃদু তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে এবং তা অব্যাহত থাকতে পারে। সারা দেশে দিনের তাপমাত্রা সামান্য কমতে পারে এবং এবং রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে। জলীয় বাষ্পের আধিক্যের কারণে অস্বন্তিভাব বিরাজমান থাকতে পারে।
আবহাওয়া পূর্বাভাসে জানানো হয়েছে- রোববার সন্ধ্যা থেকে সোমবার সন্ধ্যা পর্যন্ত রংপুর, ময়মনসিংহ ও সিলেট বিভাগের অনেক জায়গায়; ঢাকা ও চট্টগ্রাম বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় এবং রাজশাহী, খুলনা ও বরিশাল বিভাগের দুএক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়াসহ হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি/বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সেই সঙ্গে রংপুর, ময়মনসিংহ ও সিলেট বিভাগের কোথাও কোথাও মাঝারি ধরনের ভারি থেকে অতি ভারি বর্ষণ হতে পারে। চলমান তাপপ্রবাহ অব্যাহত থাকতে পারে। সারা দেশে দিনের তাপমাত্রা সামান্য বাড়তে পারে এবং রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে। বর্ধিত ৫ পাঁচ দিনে বৃষ্টিপাতের প্রবণতা বৃদ্ধি পেতে পারে বলে পূর্বাভাসে জানানো হয়েছে।
উপকূলীয় অঞ্চল খুলনা ও বরিশাল বিভাগে ঈদের দিন বৃষ্টির সম্ভাবনা প্রায় নেই বললেই চলে জানিয়ে এই আবহাওয়াবিদ বলেন, বঙ্গোপসাগর থেকে প্রচুর জলীয় বাষ্প খুলনা ও বরিশাল পেরিয়ে উত্তরাঞ্চলে যেতে যেতে মেঘে পরিণত হচ্ছে। এই মেঘ উত্তরের পাহাড়ি অঞ্চলে বাধাপ্রাপ্ত হয়ে বৃষ্টিপাত ঘটাচ্ছে। এজন্য দেশের উত্তরাঞ্চলে বৃষ্টি বেশি হচ্ছে। আর দক্ষিণাঞ্চলে বৃষ্টির পরিমাণ কম থাকছে। তবে ঈদের পর খুলনা-বরিশালে বৃষ্টি বাড়তে পারে।
সম্প্রতি বৃষ্টি হলেও ভ্যাপসা গরমের অস্বস্তি রয়েই গেছে। সপ্তাহজুড়ে দেশে মৃদু তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। এর ফলে বেড়েছে গরম। শুধু তাই নয়, বাতাসে জলীয় বাষ্প বেশি থাকায় অনুভূত হচ্ছে অস্বস্তি ভাব। এ পরিস্থিতি আরও কয়েক দিন থাকতে পারে। সে হিসেবে গরম থাকতে পারে ঈদ পর্যন্ত। তবে ঈদের পর বৃষ্টির আভাস রয়েছে।
শনিবার সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে সবচেয়ে বেশি ১১ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে সিলেটে। এ ছাড়া রংপুরে ৪৫, নীলফামারীতে ৪২, কুড়িগ্রামে ৮৪, পঞ্চগড়ে ১৩, নেত্রকোনায় ৩২, শেরপুরে ৩৫, মৌলভীবাজারে ১৫, সুনামগঞ্জে ৮৫, হবিগঞ্জে ১৮, ফেনীতে ৩৮ ও খাগড়াছড়িতে ২৭ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। তবে খুলনা ও বরিশালে গত ২৪ ঘণ্টায় বৃষ্টি হয়নি। ঢাকা বিভাগে শুধু কিশোরগঞ্জে বৃষ্টি হয়েছে ২ মিলিমটার।
বৃষ্টির প্রভাবে উত্তরাঞ্চলে তাপমাত্রা সহনীয় থাকলেও দক্ষিণাঞ্চল ছিল বেশ তপ্ত। গত ২৪ ঘণ্টায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল পাবনার ঈশ্বরদীতে, ৩৭ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আর সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল রংপুরে ২১ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। শনিবার রাজধানী ঢাকার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড হয়েছে ৩৩ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস।