রংপুর থেকে আনোয়ার হোসেন শিশিরঃ
রংপুরে ক্লিনিকের বিল পরিশোধ করতে ব্যর্থ হওয়ায় মাত্র ৪০ হাজার টাকার বিনিময়ে সদ্যভুমিষ্ট এক শিশুকে (ছেলে) বিক্রি করে দিয়েছে ক্লিনিক মালিক। এঘটনায় শিশুটির মা থানায় অভিযোগ করলে পুলিশ শিশুটির বাবা ও ক্লিনিক মালিকসহ তিনজনকে গ্রেফতার করে। পরে শিশুটিকে উদ্ধার করে তার মায়ের কাছে ফিরিয়ে দেয়া হয়েছে।
গতকাল রোববার (২১ জানুয়ারি) বিকেলে নগরীর সেন্ট্রালরোডস্থ গোয়েন্দা পুলিশ কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এই তথ্য জানান, রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের উপ-পুলিশ কমিশনার মোঃ আবু- মারুফ হোসেন। সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, নগরীর বুড়ারঘাট এলাকায় লাবনী আক্তার প্রসব বেদনা নিয়ে গত ১৩ জানুয়ারি বাসটার্মিনাল এলাকার হলিক্রিসেন্ট নামে একটি হাসপাতালে ভর্তি হন। ওই দিন রাতে সিজারের মাধ্যমে লাবনী একটি ছেলে সন্তানের জন্ম দেন।
ক্লিনিকের বিল পরিশোধে ব্যর্থ হওয়ায় ১৭ জানুয়ারী সকালে মা লাবনীর অগোচরে ক্লিনিকের মালিক এমএস রহমান রনি তার পরিচিত নিঃসন্তান দম্পত্তি জেরিনা আক্তার বিথী ও রুবেল হোসেন রতনের কাছে স্বামী ওয়াসিম আকরামের সহায়তায় মাত্র ৪০ হাজার টাকার বিনিময়ে বিক্রি করে দেয়।
এ ঘটনায় লাবনী আক্তার রংপুর মেট্রোপলিটন কোতয়ালী থানায় মামলা দায়ের করলে রোববার দুপুরে নগরীর পীরজাবাদ এলাকা থেকে শিশুটিকে উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনার সাথে জড়িত থাকার অভিযোগে ক্লিনিকের মালিক এমএস রহমান রনি (পল্লী চিকিৎসক), রুবেল হোসেন ও লাবনীর স্বামী ওয়াসিম আকরামকে গ্রেফতার করে।
লাবনী আক্তার জানান, ক্লিনিকের মালিক এমএস রহমান রনি তাদের পরিচিত হওয়ায় সেখানে গিয়ে ভর্তি হয়েছেন। হাসপাতালের বিল পরিশোধের জন্য তার স্বামী নিজের কিডনি দিতে চেয়েছিলেন। তারপরও ক্লিনিক মালিকের মন গলাতে পারেননি। তিনি তার নবজাত সন্তানকে ক্লিনিকের মালিক এমএস রহমান রনির চাপের মুখে ওই দম্পত্তির কাছে বিক্রির সহায়তা করেছে।
তার কোন দোষ নেই বলে জানান লাবনি। এঘটনায় মানবপাচার আইনে তিনজনকে আসামি করে একটি মামলা মামলা করেছে পুলিশ। শিশুটি উদ্ধারের পর অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।