আপনার এই সপ্তাহ (১৪ নভেম্বর থেকে ২০ নভেম্বর)
স্যার আর্থার চার্লস ক্লার্ক (বিজ্ঞান কল্পকাহিনী লেখক , বিজ্ঞান লেখক, উদ্ভাবক, সমুদ্রের তলদেশে অনুসন্ধানকারী)
বলেছেন –
‘জ্যোতিষশাস্ত্রে আমার কোনো বিশ্বাস নেই। তবে হ্যাঁ, এ কথা সত্য যে আমি ধনু রাশির জাতক। আসলে আমরা মানুষরা বরাবরই সন্দেহপ্রবণ’।
এ কথার বিপরীতে অনেক কথাই আছে, তবে আমরা একটা বিষয় পরিস্কার করে বলতে চাই- মানুষ নিজেই তাঁর ভাগ্য নিয়ন্ত্রণ করে অনেকাংশ, বাকি অংশ ভাগ্য বলতে দোষের কিছু নেই…

“প্রিয়তমাসু” বাংলা সাহিত্যের ধ্রুবতারা কবি সুকান্ত ভট্ট্যাচার্য এর লেখা একটি কবিতার শিরোনাম। কবিতার শেষাংশ-
“আমি যেন সেই বাতিওয়ালা-
যে সন্ধ্যায় রাজপথে-পথে বাতি জ্বালিয়ে ফেরে
অথচ নিজের ঘরে নেই যার বাতি জ্বালার সামর্থ্য
নিজের ঘরেই জমে থাকে দুঃসহ অন্ধকার”
আলো যে জ্বালায় তিনিই জানেন, আলো জ্বালাবার আনন্দ! অথচ আপনি বসে আছেন অন্যের অপেক্ষায় এইটা জেনে গেছি ভেবে কেমন যেন লাগছে প্রিয় মেষ!

এ বছর টা প্রায় যায় যায়… সামনে বছর পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে না আপনাকে, এমন কথা কাউকেই আমি বলি না। আপনাকে শুধু একটা কথাই বলতে পারি-
“যা কিছু বলেছি আমি মধুর অস্পূটে
অসি’র অবগাহনে তোমারি আলোকে
দিয়েছো উত্তর তার নব-পত্রপুটে
বুদ্ধের মূর্তির মতো শান্ত দুই চোখে।।”
— সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়
চোখের ভাষা বুঝে উঠুন- এই শুভ কামনা আপনার জন্য।

মিথুন কে বলি,
সাবধান হয়ে যান! কে জানে, ফুল ফুটে আবার না ঝড়ে যায় , জানতেও পারবেন না।

কখনো – কখনো প্রচন্ডরকম জেদ চাপে, পরে আবার নিজেকে শান্ত করি এই ভেবে-
দেখার দৃষ্টিভঙ্গি সকলের এক না। কাজেই যে যেমন চোখে দেখবে তার পৃথিবী তেমন।
এই যে “দেখার চোখ” এটার রহস্য অনেক গভীরে এমনটা না। বিজ্ঞান কি বলে পড়েন। খুব সহজ প্রক্রিয়া। তবে এর গভীরে যে কথাটা সেটা হলো, আপনার মস্তিষ্ক যা দেখতে চাইবে আপনার চোখ তাই দেখবে। আরো গুপ্তরূপ এই যে, মস্তিষ্কের যে অংশ দেখতে চাইবার ক্ষমতা রাখে, তাকে কিছুটা প্রাকৃতিক ভাবে আপনি প্রাপ্ত আর বাকিটা আপনার অভ্যাসের পরিণত রুপ।
প্রিয় কর্কট, কেন ভাবছেন এসব শুধু আপনাকেই বলছি! সকলের জন্যই বলা।
খুব প্রত্যুষে পাখিদের গানশুনে কোনদিন যদি ঘুম ভাঙ্গে আপনার, কিন্তু শরীরে তখনো আদুরে আবরণে মাখামাখি আর অন্যদিকে ভালো থাকার দায়! সেদিন দেখবেন, কি বিশাল দায় নিয়ে আপনার জন্য কেউ একজন কতটা নির্লজ্জ সেজেছিল। দেখার দৃষ্টিভঙ্গি বদলান, পৃথিবী বদলে যাবে।

শরীরের দিকে মনযোগী হন। তারুণ্যতা মনের, শরীরের না- এই বাক্য যেমন সত্য তেমনে সত্য হলো এই যে, শরীরে ব্যধি মনের তারুণ্যতাকে মলিন করে।

ঝড়ে যায় যাক, কিছু কিছু চলে যাওয়া বেদনার হলেই শেষমেশ প্রশান্তির বটে।
প্রিয় কন্যা, বারবার বলি-
হারানোর বেদনা যে সইতে পারে, সেই জানে প্রাপ্তির আনন্দ অপরিসীম…

এই যে তুলা, শীত আসি আসি করছে। ভেসে যাইয়েন না মেঘেদের কাছে! হাসছেন!
হাসুন, হাসুন! একদিন নিশ্চই জানবেন-
আপনার ভাসাভাসিতে এই সপ্তাহেই ভেসে গেছে দূরের কেউ…জানি তো ঘাবড়ানো আপনার স্বভাব না।

অ্যাডোনিস ফুলের খোঁজ কি পেয়েছেন? খুঁজতেই থাকুন!
– খুঁজে না পেলে?
পাবেন,পাবেন!
– না পেলে?
ভাই/বোন’রে অপেক্ষা করতে শিখুন! দেখুন স্বল্প সময় কতটা লম্বা হয়ে দাঁড়ায়!
আমার মতে, এই সপ্তাহ আপনার জন্য অপেক্ষার পালা…

জীবনের অধিকাংশ সময় কেটে যায় “কি করি, কি করবো” -এই ভেবে। এতো ভাবনার কিছু নেই। একবার ভাবেন- ফিওদর দস্তয়েভস্কি’র সেই বিখ্যাত বাণী-
“বড় সুখ হলো অ-সুখের উৎসের ব্যাপারে জানা”
কাজেই কিসে আপনার অ-সুখ সেটা ভেবে, তাকে ঝেড়ে ফেলুন। কর্মময় হোক জীবন।

মকরের জন্য আমার শুভকামনা অসীম…
একদিন একজনের পাশে দাঁড়িয়ে বলেছিলাম- আমার মৃত্যুর কালে তোমাকে খুব কাছে থেকে দেখতে চাই!
দারুণ নীরবতায় আমাকে সে ভুগিয়েছে! কিন্তু কেন জানি না মনে হয়, আমার মৃত্যুর কালে সবচেয়ে সুন্দর হাসিটা উনি হাসবেন! আমার আফসোস আমি সে হাসিটা দেখতে পারবো না।
মকরের জন্য এই সপ্তাহ এমন দোদুল্যমানতায় কেটে না যাক এমনটাই শুভ কামনা আমার।

বেঁচে থাকার জন্য যেমন জরুরী অক্সিজেন, তেমনি জরুরী কার্বন ডাই অক্সাইড ত্যাগ। এমন অনেক চক্রে জীবন প্রকৃয়া বাঁধা! কাকে অস্বীকার করবেন? ত্যাগ নাকি ভোগ? জীবনের এইসব অংক কষতে গিয়ে ক্লান্ত হয়ে যাবেন না প্লিজ! শুধু ভাবতে শিখুন- যদি ত্যাগের মাধ্যমে পরিশুদ্ধতা আসে তাকে ত্যাগ করাই উত্তম! আমি জানি-
“বিচ্ছেদ সয়ে নেয়া যায়, প্রতারণা না!”

ফ্রানৎস কাফকার মেটামরফোসিস সম্পর্কে দক্ষিণ আমেরিকার নোবেলজয়ী সাহিত্যিক গ্যাব্রিয়েল গার্সিয়া মার্কেস বলেছিলেন:
আমি যখন কলেজে ভর্তি হই, সাহিত্যের সাধারণ পড়াশোনা আমার ভালোরকমই ছিল, আমাদের বন্ধুদের চেয়ে গড়পরতা অনেক বেশি। বোগোতা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সময়ে আমার নতুন নতুন বন্ধু তৈরি হতে থাকে, যারা আমাকে সমকালীন লেখকদের সঙ্গে পরিচিত করানো শুরু করে। এক রাতে এক বন্ধু আমাকে ফ্রানৎস কাফকার ছোটগল্পের একটি বই ধার দেয়। আমি যে মেসে থাকতাম, সেখানে যাই, আর সে রাতেই কাফকার ‘রূপান্তর’ গল্পটি পড়া শুরু করি। প্রথম লাইনটা পড়ামাত্র আমার প্রায় বিছানা থেকে পড়ে যাওয়ার মতো অবস্থা। কী যে অবাক হই আমি।
প্রথম লাইনটা ছিলঃ- ‘এক ভোরে গ্রেগর সামসা অসুখী সব স্বপ্ন থেকে জেগে উঠে দেখে সে তার বিছানায় প্রকাণ্ড এক পোকায় রূপান্তরিত হয়ে পড়ে আছে …।’
আমি লাইনটা নিজেকে নিজে পড়ে শোনাতে লাগলাম, ভাবলাম , এভাবে যে কেউ লিখতে পারে তা-ই তো আমার জানা ছিল না; যদি জানতাম, তাহলে আমি নিশ্চয় আরো কত আগেই লেখালেখি শুরু করতাম। তারপরই, আর দেরি না করেই, আমি ছোটগল্প লেখা শুরু করলাম।এরপরই… আমার সাহিত্যে পদচারণার শুরু।
প্রিয় মীন, আমিও চাই গ্যাব্রিয়েল গার্সিয়া মার্কেস’র মতইআপনার পথ চলা শুরু হোক… চলমান এই সময়ের বিপরীতে কেন জানি না মনে হয়, আপনি পারবেন।
জেনে রাখা ভালো–
১. জন্ম তারিখ অনুযায়ী ক্ষেত্র বিশেষে রাশি মেলে না (বেশ কিছু হিসাব থেকে যায়)।
২. এখানে রাশিচক্রে আমি ‘সংখ্যা তত্ত্ব-জ্যোতিষ’ পদ্ধতি প্রয়োগের চেষ্টা করেছি।
৩. ভাগ্য অনেক ক্ষেত্রে অনির্দিষ্ট কারণে নিজের গতিপথ বদলাতে পারে এবং করেও।

1 Comment