অন্যান্য সংস্কৃতি

নিমন্ত্রণ

অরবিন্দ কুমার সরকার:

নিমন্ত্রণ কথাটি এসেছে আহ্বান বা আমন্ত্রণ জানানোর অর্থে বাংলা ভাষাতে। নিমন্ত্রণ শব্দের ব্যবহার তখনই প্রস্ফুটিত হয় যখন দু’জন বা তার অধিক ব্যাক্তি কিংবা কোন প্রতিষ্ঠান অনেকটাপথ অতিক্রম করে একে অপরকে আহ্বান করে। ভিন্ন ভিন্ন জাতি গোষ্ঠীর ভাষা ভিন্ন ভিন্ন সচরাচর আমরা সেটাই দেখতে পাই। কিন্তু এই সকল ভাষার নানা শব্দ নানা ভষায় প্রবেশের ফলে এক একটি ভাষা সমৃদ্ধি সহ বৈচিত্র্যময় হয়ে উঠে। ” দাওয়াত ” আরবি শব্দ, আহ্বান কিংবা আমন্ত্রণের ক্ষেত্রে এই শব্দটি বাংলা ভাষায় বহুল প্রচলিত।

লেখককে দেয়া নিমন্ত্রণপত্র

নিমন্ত্রণ কবিতাটির সাথে পরিচিত প্রাইমারী স্কুল থেকেই এই কবিতা খুব আবেগ দিয়ে স্যার পড়াতেন, আর আমরাও আবেগ প্রবন হয়ে শুনতাম। এখন কেউ যখন আমন্ত্রণ পত্র বা পান সুপারি হাতে নিয়ে নিমন্ত্রণ কিংবা দাওয়াত করতে আসেন সাথে সাথে পল্লী কবি জসিমউদদীনের সেই বিখ্যাত কবিতার কথা মনে পড়ে যায়।

তুমি যাবে ভাই – যাবে মোর সাথে আমাদের ছোট গাঁয়,
গাছের ছায়া লতায় পাতায় উদাসী বনের বায় ;
মায়া মমতায় জড়াজড়ি করি
মোর গেহ খানি রহিয়াছে ভরি,
মায়ের বুকেতে, বোনের আদরে ভায়ের স্নেহের ছায়,
তুমি যাবে ভাই – যাবে মোর সাথে আমাদের ছোট গাঁয়।
ছোট গাঁওখানি – ছোট নদী চলে, তারি একপাশে দিয়ে,
কালো জল তার মাজিয়াছে কেবা কাকের চক্ষু নিয়া।
ঘাটের কিনারে আছে বাঁধা তরী,
পারের খবর টানাটানি করি ;
বিনাসূতী মালা গাঁথিছে নিতুই এপার ওপার দিয়া ;

শহুরে বন্ধু কে কবির এই আমন্ত্রন হৃদয়ের নিগুঢ় কোন থেকে আসা, গ্রামের প্রকৃতিকে তুলে ধরে কবি তার আন্তরিকতার বহিঃপ্রকাশ করেছেন কবিতার মাধ্যমে।

লেখকের সংগ্রহে থাকা নিমন্ত্রণপত্র

অনেক আগের কথা বলছি দূরদূরান্ত থেকে আত্মীয় স্বজনরা যখন নিমন্ত্রণ করতে আসতেন তাদের নিমন্ত্রণ করার ভঙ্গি দেখে অবাক হতাম, গলায় চাদর কিংবা গামছা চড়িয়ে করজোড়ে বিনয়ের সাথে পান সুপারি বা নং হাতে দিয়ে নিমন্ত্রণ করতেন। তারপরে বসতেন নাস্তাপানি গল্পসল্প হতো। যুগের পরিবর্তনের সাথে সাথে নিমন্ত্রণ দেবার ধরনও বদলে গেছে।

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।