রাজনীতি

অবশেষে মুখ খুললেন জিএম কাদের

অবশেষে মুখ খুললেন জিএম কাদের

গতকাল থেকে নিশ্চুপ ভুমিকা পালন করলেও অবশেষে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন পরবর্তী সার্বিক বিষয়ে দলের অবস্থান ও নির্বাচন নিয়ে আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জিএম কাদের। নির্বাচনের ফলাফল প্রত্যাখ্যান করার সম্ভাবনা নাকচ করে দিয়ে তিনি বলেছেন, ‘ফলাফল প্রত্যাখ্যান করার কোনও কারণ দেখছি না। তবে সার্বিকভাবে নির্বাচন ভালো হয়নি। আমার বিশ্বাস, দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন গ্রহণযোগ্যতা পাবে না।’

সোমবার (৮ জানুয়ারি) বেলা সাড়ে ১১টায় রংপুর নগরীর নিউ সেনপাড়া মহল্লায় তার পৈতৃক বাসভবন স্কাইভিউতে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে তিনি এসব কথা বলেন।

জি এম কাদের বলেন, ‘আমরা আগে থেকেই যেটা আশঙ্কা করেছিলাম সেটাই হয়েছে। সরকার যেখানে নিরপেক্ষ থাকতে চেয়েছে সেখানে নিরপেক্ষ নির্বাচন হয়েছে। আর যেসব আসনে তাদের দলের প্রার্থীদের জয়ী করতে চেয়েছে সেটাই করেছে। আমরা আগে থেকেই আশঙ্কা করেছিলাম। যেটা নিয়ে আতঙ্কিত ছিলাম, নির্বাচন নিরপেক্ষ হচ্ছে না। এজন্য অনেকে নির্বাচনে আসতে চাচ্ছে না।’

তিনি আরও বলেন, ‘ঢাকা-১ আসনে সালমা ইসলামের সব ভোটকেন্দ্র দখল করে এজেন্টদের বের করে দিয়ে আওয়ামী লীগ প্রার্থীর পক্ষে সিল মেরে বাক্স ভর্তি করে তাকে জয়ী করা হয়েছে। একইভাবে কুমিল্লা-১ আসনে জাপা প্রার্থী আমির হোসেন ভুঁইয়া, জামালপুরে সামসুল আলম লিপটন, নরসিংদী-২ আসনে রফিকুল ইসলাম সেলিম, কক্সবাজার-৪ আসনে নুর আলম সিকদার ভুট্টু, শেরপুর-১ আসনে মাহমুদুল হক মনি, লালমনিরহাট-৩ আসনে জাহিদ হোসেন, সিলেট-২ আসনে ইয়াহিয়া চৌধুরী, গাইবান্ধা-৩ আসনে মাইনুর রাব্বি চৌধুরী, নারায়ণগঞ্জ-১ আসনে শফিকুল ইসলাম, নারায়ণগঞ্জ-২ আসনে আলমগীর শিকদার লোটন , চাঁদপুর-৪ আসনে সাজ্জাদ হোসেন, কুড়িগ্রাম-৪ আসনে সাইফুর রহমান, বাগেরহাট-৪ আসনে সাধন কুমার মিস্ত্রি, জয়পুরহাট-১ আসনে ডা. মোয়াজ্জেম হোসেন, নীলফামারী-১ আসনের প্রার্থী তসলিম উদ্দিন, রংপুর-৪ আসনে মোস্তফা সেলিম বেঙ্গল, রংপুর-৬ আসনে নুর আলম যাদু; এসব আসনে আমাদের প্রার্থীরা নিশ্চিতভাবে জয়ী হতো। তাদের বিজয় ছিনিয়ে নেওয়া হয়েছে।’

জাপা চেয়ারম্যান বলেন, ‘এ ছাড়া আরও অনেক আসন ছিনতাই করেছে আওয়ামী লীগ। আমরা বিভিন্ন স্থান থেকে খবর পাচ্ছিলাম। একপর্যায়ে আমরা অসহায় হয়ে গেছি। যেখানে যেখানে প্রয়োজন যোগাযোগ করলেও তাদের আশ্বাসে কোনও কাজ হয়নি। অনেক আসনে আমাদের প্রার্থীদের বাড়িতে বাড়িতে গিয়ে প্রার্থিতা প্রত্যাহার করাতে বাধ্য করা হয়েছে। এটা বাংলাদেশের রাজনীতিতে বড় ধরনের ডাইমেনশন দেখা গেলো। এর জন্যে ভবিষ্যতে সরকারকে মাশুল দিতে হবে।

তিনি বলেন, ‘রবিবারের নির্বাচনে আমরা আশানুরূপ ফল পাইনি। আমাদের অনেক আসন দখল করা হয়েছে। সরকার সমর্থক কিছু মিডিয়াসহ বিভিন্নজন বলছেন আমাদের ২৬টি আসনে ছাড় দেওয়া হয়েছে। এটা ঠিক আমাদের ২৬টি আসনে আওয়ামী লীগ তাদের দলীয় প্রার্থিতা প্রত্যাহার করেছে। কিন্তু সব আসনে তাদের দলের শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী যারা স্বতন্ত্র হিসেবে অংশ নিয়েছে তাদের দলীয়ভাবে সব ধরনের সহায়তা করা হয়েছে। আমরা আগেও বলেছি আওয়ামী লীগের সঙ্গে আমাদের কোনও মহাজোট বা জোট হয়নি। তারা আমাদের সঙ্গে ওয়াদা করেছিল, নির্বাচনে প্রশাসন নিরপেক্ষ থাকবে, তাদের প্রার্থীদের অস্ত্র এবং অর্থের প্রভাবমুক্ত রাখবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘নির্বাচনের ফলাফল দেখেই প্রমাণিত হয়েছে তারা আমাদের আসন ছেড়ে দেয়নি। বরং আমাদের জয় হওয়া আসন কেড়ে নিয়েছে। এটা সরকার ইচ্ছাকৃত হোক বা অনিচ্ছাকৃত আসন ভাগাভাগির কথা প্রচার করে সাধারণ মানুষের মধ্যে আমাদের বিরুদ্ধে অপপ্রচার করেছে। এটা করে দলের প্রার্থী ও সাধারণ মানুষকে বিভ্রান্ত করা হয়েছে।’

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।