সরকারি স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠানগুলোয় বিনামূল্যে খাওয়ার স্যালাইন (ওরাল রিহাইড্রেশন সল্ট বা ওআরএস) সরবরাহ করছে স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের জনস্বাস্থ্য ইনস্টিটিউট। সারাদেশে প্রতিষ্ঠানটির খাওয়ার স্যালাইন উৎপাদনের পাঁচটি আঞ্চলিক ইউনিট রয়েছে। এরমধ্যে গত বৃহস্পতিবার কাঁচামাল সংকটের কারণে যশোরে সরকারি হাসপাতালে বিনামূল্যে দেয়া খাওয়ার স্যালাইন (ওরাল রিহাইড্রেশন সল্ট বা ওআরএস) উৎপাদন বন্ধ হয়ে গেছে। এর প্রভাবে খুলনা বিভাগসহ ফরিদপুর ও রাজবাড়ি জেলায় সরকারি স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠানে খাওয়ার স্যালাইনের সংকট দেখা দিয়েছে।
তবে স্বাস্থ্য বিভাগের দাবি, এক মাসের স্যালাইন মজুত আছে, আর উৎপাদন শুরু করতে এরই মধ্যে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
যশোর ইউনিটের ব্যবস্থাপক ডা. রেওনেওয়াজ রনি বলেন, ‘গত ২৯ নভেম্বর থেকে স্যালাইন উৎপাদন বন্ধ রয়েছে কিন্তু আমাদের কাছে প্রায় পাঁচ লাখ ব্যাগ স্যালাইন মজুত রয়েছে; যা দিয়ে আগামী এক মাস যাবে। যদি এর মধ্যে কাঁচামাল সরবরাহ না পাওয়া যায়, তাহলে সংকট দেখা দিতে পারে। তবে শুনেছি, সরকার অতি শীঘ্রই বিদেশ থেকে কাঁচামাল আনছে। আশা করছি, স্বাস্থ্যসেবায় এর প্রভাব পড়বে না।’
শিশুমৃত্যর প্রধান কারণগুলোর মধ্যে অন্যতম কারণ ডায়রিয়াজনিত রোগ। বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই ডিহাইড্রেশনের কারণে এসব মৃত্যু হয়। ডায়রিয়াজনিত রোগের ফলে শরীরের পানি স্বল্পতা পূরণ করতে খাওয়ার স্যালাইন মুখ্য ভূমিকা পালন করে। এজন্য স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের জনস্বাস্থ্য ইনস্টিটিউট সরকারি হাসপাতাল ও কমিউনিটি ক্লিনিকে বিনামূল্যে খাওয়ার স্যালাইন সরবরাহ করে থাকেন। সারা দেশে প্রতিষ্ঠানটির খাওয়ার স্যালাইন উৎপাদনের পাঁচটি আঞ্চলিক ইউনিট রয়েছে। এরমধ্যে যশোরে রয়েছে একটি। এ কারখানা থেকে যশোরসহ খুলনা বিভাগের ১০ জেলা এবং ফরিদপুর ও রাজবাড়ি জেলায় খাওয়ার স্যালাইন সরবরাহ করা হয়। কারখানাটিতে প্রতিদিন ১৫ হাজার প্যাকেট স্যালাইন উৎপাদিত হতো।
যশোর ইউনিটের স্টোরকিপার মো. আওরঙ্গজেব বলেন, ‘স্যালাইন তৈরিতে যে চারটি কাঁচামাল দরকার, তার মধ্যে গ্লুকোজ একেবারেই স্টক শূন্য। এর বাইরে সোডিয়াম ক্লোরাইড, পটাশিয়াম ক্লোরাইড ও ট্রাইসোডিয়াম আছে ৫০ বস্তার মতো। যে কারণে উৎপাদন করা সম্ভব হচ্ছে না।’
জেলা সিভিল সার্জন বিপ্লব কান্তি বিশ্বাস বলেন, ‘আমরা দ্রুত কাঁচামালের চাহিদা প্রেরণ করেছি। আশা করছি, দ্রুত কাঁচামাল আসবে। এলেই আবার উৎপাদন শুরু হবে।’