গত বুধবার মিয়ানমারের সাগাইন অঞ্চলের তেজ শহরের স্কুল ও হাসপাতালকে লক্ষ্য করে জান্তা বাহিনীর যুদ্ধবিমান থেকে হামলা চালানো হয়েছে। এ ব্যাপারে স্থানীয়রা জানিয়েছেন, এতে স্কুল ভবন ও বাড়িঘরসহ অনেক কিছু ধ্বংস হয়েছে। এছাড়াও তাজে শহরের ইয়াওয়ার শাই গ্রামের স্কুল ও হাসপাতালে দু’বার যুদ্ধবিমান থেকে হামলা চালানো হয়।
জান্তাপন্থি টেলিগ্রাম চ্যানেলগুলোতে বোমা ফেলার জন্য জান্তা বাহিনীকে আহ্বান জানানোর কয়েক ঘণ্টা পরই ইয়াওয়ার শাই এবং মায়ে জালি কোনে গ্রামে আক্রমণগুলো হয়েছে। গ্রামগুলোতে আহত প্রতিরোধ যোদ্ধারা অবস্থান নিয়েছে এমন অভিযোগ করে হামলা চালানো হয়। স্থানীয় পিপলস ডিফেন্স কমরেডদের মুখপাত্র হতু খান্ত জাও বলেছেন, যুদ্ধবিমান কাছাকাছি আসার খবর শুনে গ্রামবাসী পালিয়ে যাওয়ার কারণে হামলায় কোনো বেসামরিক হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি।
এদিকে মিয়ানমারের জান্তাপ্রধান মিন অং হ্লাইং বুধবার বলেন, উত্তর সীমান্তে সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে ব্যাপক আক্রমণে জাতিগত সংখ্যালঘু সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোকে বিদেশি বিশেষজ্ঞরা সহায়তা করছে। অক্টোবরে তিনটি জাতিগত সংখ্যালঘু গোষ্ঠীর একটি সশস্ত্র জোট সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে আকস্মিক আক্রমণ শুরু করার পর মিয়ানমারের উত্তরাঞ্চলীয় শান রাজ্যজুড়ে সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়েছে। এরই মধ্যে সশস্ত্র বিদ্রোহীরা চীন সীমান্তে মিয়ানমারের একটি গুরুত্বপূর্ণ এলাকার (সীমান্ত ফটক) নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নেয়, যা জান্তা সরকারের জন্য বড় ধাক্কা ছিল। এর ফলে চীনের সঙ্গে ওই পথ দিয়ে বাণিজ্য বন্ধ হয়ে গেছে। পাশাপাশি রাজ্যের ৩ লাখ ৩০ হাজারের বেশি মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়।
অন্যদিকে, উত্তর-পূর্ব ভারতে মিয়ানমারে সামরিক জান্তা এবং বিভিন্ন জাতিগোষ্ঠী ও গণতন্ত্রপন্থি বিদ্রোহীদের মধ্যে লড়াইয়ের প্রভাব বাড়ছে। কারণ, মিয়ানমারে সামরিক জান্তার বিরুদ্ধে অন্যদের লড়াইয়ে সাধারণ মানুষ ও সেনাবাহিনীর অনেকেই সীমান্ত পেরিয়ে ভারতের মিজোরাম রাজ্যের জঙ্গলে আশ্রয় নিচ্ছেন। সেখান থেকে তাদের মণিপুরে এনে ফেরত পাঠাতে হচ্ছে ভারতকে।